নড়াইলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী চাষ। কম খরচে অধিক ফলন ও লাভবান হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন জেলার কৃষকরা। ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বিকল্প পদ্ধতি ও অধিক লাভের আশায় দিন দিন এর চাষ বাড়ছে বলে মনে করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সদর উপজেলার তুলারামপুর চাঁচড়া মাঠে যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ গালিচার মতো সূর্যমুখী খেত। দিগন্ত বিস্তৃত এ ফসলের মাঠে যেন চারিদিকে হলুদের সমারোহ। দুই চোখ জুড়ানো এ মাঠে প্রতিদিন বিকেলে সেলফি তুলতে ভিড় করছেন তরুণ-তরুণীরা।
মুখী খেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক মিতনা গ্রামের রসময় বিশ্বাস। তিনি ৭০ শতক জমিতে এ বছর সূর্যমুখী আবাদ করেছেন। এ বছর তার খেতের ফলন খুব ভালো হয়েছে। সরিষার তুলনায় সূর্যমুখী চাষে তিনগুণ লাভ করা যায়। স্থানীয় বাজারেই তেল ভাঙানো মেশিন থাকায় নিজেদের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারছেন তিনি।তুলারামপুর চাঁচড়া এলাকার কৃষক বিল্লাল মোল্যা বলেন, আমি ৩৫ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। শুরুতে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব বিশ্বাসের পরামর্শে তা ঠিক হয়ে গেছে। সঠিকভাবে সার, ওষুধ ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ভালো ফলনের আশা করছি। তবে বৃষ্টি হলে আরও ভালো ফলন হতো। মিতনা গ্রামের আরেক কৃষক গোতম বিশ্বাস বলেন, গত বছর আমি ২৫ শতক জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছিলাম। চাষ করে ভালো ফলন ও লাভ হওয়ায় এ বছর ৪০ শতক জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। সূর্যমুখীর চাষে বিঘাপ্রতি জমিতে ১৩ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন ভালো হবে। সুর্যমূখীর বিচি প্রতি মণ ৩৫০০ টাকার ওপরে বিক্রি হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ১১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫৬ মেট্রিকটন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, সূর্যমুখী আবাদে কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে বীজ ও সার ছাড়াও প্রকল্পের মাধ্যমে বীজ, সার ও পরিচর্যা বাবদ নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বিকল্প পদ্ধতি ও অধিক লাভের আশায় দিন দিন সূর্যমুখী চাষে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন